মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গুম করে, খুন করে, হয়রানি করে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা স্তব্ধ করা যাবে না। এটা আমাদের অন্তর্গত শক্তি। এক সময় মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। এখন গণতন্ত্রের জন্য, বাকস্বাধীনতার জন্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আদালতের ‘ফরমায়েশি’ রায়ের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, কারণ এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এখনই এরা ঘরে থাকতে দেয় না, রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা শুরু হয়েছে। গায়েবি মামলা দিয়ে যাচ্ছে। জামিন পাওয়ার পরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। যদি বিশ্বাসই করত তাহলে তারা এ দেশকে গণতন্ত্রকামী রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য চেষ্টা করত। এরা দু’বার জোর করে ভোট করে দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে হাস্যকর অবস্থায় ক্ষমতা দখল করে আছে।’বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগ আবার আগের মত নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাওয়ার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। তারা ডিসি-এসপি রদবদল, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি‒ এগুলো দিয়ে যাচ্ছে আবার জোর করে নির্বাচন করার জন্য।’তিনি বলেন, ‘এবার আর সেটা হবে না। বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। বাংলাদেশের মানুষ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে‒ এদেশে গণতন্ত্র নেই। গত দুটি নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে চুরি-ডাকাতি হয়েছে। এবার অবশ্যই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে।’ আওয়ামী লীগের হাতে কেউ নিরাপদ নয়‒ এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখনুল বলেন, ‘গত কয়েক বছরে ৫৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সহস্রাধিক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে লিখতে পারছেন না। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গুলি করা হচ্ছে, হাতুড়ি দিয়ে হাত পা গুঁড়ো করে দেওয়া হচ্ছে। এর নামই কি গণতন্ত্র!’তিনি বলেন, ‘স্রোতের মত বন্যার পানির মতো মানুষ আসছে, মানুষের এই দুর্বার আন্দোলনে তরঙ্গের পর তরঙ্গ সৃষ্টি করে একদলীয় শাসককে পরাজিত করতে হবে। আজ শুধু আমরা একাই নই, সকল রাজনৈতিক দল বলছে‒ এই সরকার থাকতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরীর পরিচালনায় সমাবেশে পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের শহীদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. মো. মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-এ্যাবের প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, আলমগীর হাসিন আহমেদ, প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম, আসাদুজ্জামান চুন্নু, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, উমাশা উমায়ন মনি চৌধুরী, মেহেদী হাসান সোহেল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপস্থিত অধ্যাপক মো. শামসুল আলম, অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী প্রমুখ।
Leave a Reply