বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলায় হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামে একটি বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাস লোহার সেতু ভেঙে খালে পড়ে নয়জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ১৭জন যাত্রী নিয়ে ছেলের বাড়িতে আসার সময় শনিবার এ দুর্ঘটনা ঘটে ।
শনিবার (২২ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আমতলী উপজেলার প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সেতুটিতে আগে থেকেই টাঙানো ছিল সতর্কীকরণ নোটিশ। আর পায়ে হাঁটার এই লোহার সেতুতে নির্দেশনা না মেনে মাইক্রেবাস চলার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরা জানান, প্রায় বিশ বছর আগে নির্মিত সেতুটিতে চলাচলে সতর্কতা নোটিশ টাঙানো ছিল।এই লোহার সেতুটি পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের মনির হাওলাদারের মেয়ে হুমায়রা বেগমের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল শুক্রবার। ওই অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে শনিবার দুপুর দুইটার দিকে তারা মাইক্রোবাসে করে আমতলী আসছিল। পথিমধ্যে মাইক্রোবাসটি হলদিয়া বাজার সংলগ্ন লোহার সেতু পার হওয়ার সময় মাঝ বরাবর ভেঙে খালে পড়ে তলিয়ে যায়। পরে মাইক্রোবাসটি পানির ওপরে তোলার পর মরদেহ বের করা হয়।
এ দুর্ঘটনায় প্রথমে সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়, পরে আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় । নিহত সবাই নারী ও শিশু । তাদের মধ্যে সাতজনের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন এলাকায় এবং দুইজনের বাড়ি আমতলী উপজেলায় ।
নিহতরা হলেন- শিবচরের মুনী বেগম (৪০), তার ছোট মেয়ে তাহিয়া (৭), বড় মেয়ে তাসফিয়া (১১), একই এলাকার ফরিদা বেগম (৫৫), রাইতি (৩০), ফাতেমা আক্তার (৪০), রুবী বেগম (৪০), ও আমতলীর হলদিয়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের মেয়ে হৃদি (৫) ও তার মা জাকিয়া বেগম (৩০)।
এ সময় চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন- মাহবুব খান, সোহেল খান, সুমা আক্তার ও দীশা আক্তার।
জীবিত উদ্ধার হওয়া মাহবুব খান বলেন, ‘শুক্রবার আমরা ভাগ্নি হুমায়রা বেগমের বাড়ি আমতলীর হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামে যাই। সেখান থেকে একটি মাইক্রোবাস যোগে আজ শনিবার দুপুর ১টার দিকে ভাগ্নি জামাইয়ের বাড়ির অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য রওয়ানা করি । দুপুর দেড়টার দিকে হলদিয়া বাজার সংলগ্ন একটি লোহার সেতু পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাসটি মাঝ বরাবর আসার পর আকস্মিক সেতুটি ভেঙে যায়। এরপর আর কিছুই বলতে পারি না। জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে। আমার ‘সব শ্যাষ হইয়া গ্যাছে এর চাইতে আমাদেরও মইর্যা যাওয়া ভালো ছিল।’
হলদিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম সোহেল বলেন, সেতু ভেঙ্গে মাইক্রোটি খালে পড়ে যাওয়ার পর আমরা খবর পেয়ে দ্রæত উদ্ধার করি। ৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় ৯ জন মারা গেছে।
দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বরগুনার সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু বিকেলে আমতলী হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। সূ/সমক,,
Leave a Reply